রায়পুরাার প্রবাসী ২৬ বছর পর বাড়ি আসায় উৎসব।
হারুনূর রশিদ :
দীর্ঘ ২৬ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ জন্মভূমি নরসিংদীর রায়পুরার নিজ গ্রামে ফিরেছেন প্রবাসী ও সমাজসেবক মিজানুর রহমান সুমন। তার দীর্ঘ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবমুখর ও আবেগঘন পরিবেশ।
গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের তালুককান্দির নিজ বাড়ি মাষ্টারবাড়িতে পৌঁছালে তাকে বরণ করে নিতে ছুটে আসেন স্বজন ও এলাকাবাসী। ফুলেল শুভেচ্ছা, মিষ্টিমুখ আর আনন্দমিছিলের মধ্য দিয়ে তাকে দেয়া হয় উষ্ণ সংবর্ধনা।
এর আগে ভোরে স্ত্রী কল্পনা ও দুই কন্যা এনজেল ও আফরিনকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন সুমন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা। পরে মাষ্টারবাড়ি চত্বরে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্বজন ও এলাকাবাসী, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
স্থানীয়রা জানান, মিজানুর রহমান সুমন তালুককান্দি গ্রামের মরহুম আতাউর রহমানের ছেলে। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে তিনি বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। প্রবাসজীবনেও নিজ গ্রামের মানুষের পাশে ছিলেন অর্থ ও সহযোগিতার মাধ্যমে। তাঁর ফাউন্ডেশন ‘মাষ্টার বাড়ি ফাউন্ডেশন’ এরইমধ্যে অসচ্ছল শিক্ষার্থী, দুঃস্থ পরিবার এবং অসুস্থ রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ভাই রাশেদ প্রধান বলেন,
“সুমনের মতো প্রবাসীরা যখন দেশে ফিরে সমাজের পাশে দাঁড়ায়, তখন তা আমাদের তরুণদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকে। তিনি শুধু প্রবাসে ছিলেন না, দেশেও সবার পাশে থেকেছেন।”
সুমনের মেয়ে এনজেল ও আফরিন জানায়,
“বাবার শৈশবের গ্রামের গল্প শুনেছি অনেকবার। এবার নিজের চোখে দেখার সুযোগ হলো, সেটা বাবার হাত ধরে।”
স্ত্রী কল্পনা বেগম বলেন, “স্বামীর অনুপস্থিতিতে কয়েকবার দেশে এলেও পরিবার একসাথে কখনো ফেরা হয়নি। এবার সেই স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে।”
মিজানুর রহমান সুমন বলেন,
“জন্মভূমির টান কখনোই মুছে যায় না। মা-বাবাকে না পাওয়ার বেদনা থাকলেও এলাকাবাসীর ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ভবিষ্যতে শিক্ষা ও মানবসেবায় সক্রিয়ভাবে কাজ করতে চাই। ‘মাষ্টার বাড়ি ফাউন্ডেশন’-এর কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করবো ইনশাআল্লাহ।”
—————-#—————